Saturday, 5 September 2015

                                        অজানা পিউ
                                        এক   
পিউ যখন চাকরি পেল সে তখন আনন্দে আত্মহারা। কিন্তু মা আর বাপি দুজনেই বলেছিল এতদূরে তাও আবার একেলা, ছেড়ে দেওয়াটা কি ঠিক হবে? তবে পিউ ওইসব কিছুই শোনেনি। কোম্পানি টা গুরগাঁওতে। প্রথম দিন ওকে গাড়ি নিতে এসেছিল নিউ দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন থেকে। যাওয়ার সময় দিল্লি শহর টা দেখে সে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেছিল। যেরকম টিভিতে দেখায় তার থেকেও সুন্দর। সে মনে মনে প্রার্থনা করেছিল যেন এই শহর ছেড়ে তাকে না কোথাও যেতে হয়। প্রেসিডেন্ট এস্টেট কতগুলো গেট পেরল সে প্রথমে খেয়াল-ই করেনি। তারপরেই এগার মূর্তি, সে এতদিন এগার মূর্তি শুধু দশ টাকার নোটেই দেখেছে। অবাক হয়ে রাস্তার ধারের দৃশ্যগুলো নিরীক্ষণ করছিল কখন যে গুরগাঁওতে ঢুকে পরেছে বুঝতেই পারেনি। ওর অফিসের ঠিকানাটা ছিল সেক্টর-১৮, উদ্যোগ বিহার। যেই গলিটা দিয়ে গাড়িটা ঢুকলো সেই গলির মুখে বামদিকে একটা বড় হোর্ডিং-এ এয়ারটেল লেখা। রাস্তার দুইধারে প্রচুর কোম্পানি। গাড়িটা থামল একটা কাল দরজার সামনে, সেখানে কোনও নেম-প্লেট নেই তার একটু ভয় করল দিল্লিতে যেসব ঘটছে কিছুদিন ধরে। কিন্তু পার্কিং-এ ঢোকার আগেই দেখল একটা বোর্ড তাতে লেখা রাবার রিসার্চ অ্যান্ড কোম্পানি। সে একটু মনে শান্তি পেল। গাড়ি থেকে নামতেই একজন এসে পিউকে ভেতরে নিয়ে গেল লোকটার নাম সুখবিন্দর সবাই তাকে নাকি সুখি বলে ডাকে, লোকটা খুব মিশুকে আর মজার। পিউকে নিয়ে গিয়ে সে রিসেপশনে বসাল। পাঁচ মিনিট পরে একজন ভদ্রমহিলা এলেন কয়েকটা প্রশ্ন করে তার ডকিউমেন্ট গুলো নিয়ে আবার ভেতরে চলে গেল। পিউ অবাক হয়ে ভদ্রমহিলাকে দেখছিল, এত সুন্দর দেখতে ঠিক যেন পরি, হিন্দি মুভির হিরোইন বয়স হবে এই বত্রিশ কিম্বা তেত্রিশ, পিউ-এর থেকে চার-পাঁচ বছরের বড়বাড়িতে সবাই তাকে সুন্দরি বলে একে দেখলে বাড়ির সবাই কি বলত সেটাই বসে বসে ভাবতে লাগলো। প্রায় দশ পনের মিনিট পরে সেই ভদ্রমহিলা এলেন এসে তার নিজের পরিচয় দিলেন। তিনি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার, নাম রেণুকা সিনহা্‌। এই নামটা সে যেন কোথাও শুনেছে কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারলো না। রেণুকা ম্যাডাম পিউকে অনেক প্রশ্ন করল পড়াশুনা থেকে নলেজ থেকে, কি কি কাজে তার ইন্টারেস্ট, আগে যে ল্যাব-এ ছিল সেখানে কি কি ইন্সট্রুমেন্ট ছিল, পিউ নিজে কি কি ইন্সট্রুমেন্ট হ্যান্ডল করতে জানে এইসব, যদিও পিউ-এর ইন্টারভিউ কলকাতাতেই হয়ে গেছিল, সিলেক্টেড হয়েই এখানে এসেছে। শেষে বলল এম. ডি. স্যার বলেছেন তাকে নিয়ে গিয়ে ল্যাব এ বসাতে উনি ওখানেই পিউ-এর সাথে দেখা করবেন। পিউ এই কথাটা শুনে একটু ঘাবড়ে গেছিল। ওরা ল্যাব-এ এসে বসল। পিউ এইবার সাহস করে রেণুকা ম্যাডামকে জিঙ্গাসা করল এই ল্যাব-এ কি কি ইন্সট্রুমেন্ট আছে, সফটওয়ার বেস্‌ড নাকি ম্যানুয়াল এইসব। কিছুক্ষণ পরে ল্যাবে ঢুকলেন একজন টল ডার্ক হ্যান্ড-সাম ভদ্রলোক, না না ঠিক লোক বলা চলে না ছেলে বলা যায় পিউ-এর চেয়ে বড়জোর বছর পাঁচ-ছয়ের বড় কোম্পানির এম ডি মিস্টার শুভদীপ শর্মা। পিউ মনে মনে ভাবল পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে দিয়েও এইসব নাম ইউজ হয়! এম ডি আসলেন ঠিকই কিন্তু পিউএর সাথে কোনও কথা বললেন না যেন দেখতেই পেলেন না পিউকে শুধু রেণুকা ম্যাডামকে কিছু ইন্সট্রাকশন দিয়ে চলে গেলেন। পিউ বুঝল যে এখানে মালিক এবং তার এমপ্লয়ির মধ্যে বেশ একটা দূরত্ব আছে।তারপর ল্যাব-এ তার পুর দিনটা কেটে গেল রেণুকা ম্যাডাম জানিয়ে গেছেন যে বিকেলে তাকে ড্রাইভার ফ্ল্যাট-এ ছেড়ে দিয়ে আসবে। এতদূর জার্নি করে এসেছিল বলে একটু ক্লান্তি লাগছিল কিন্তু নতুন চাকরি নতুন লোকজন তার বেশ ভালই লাগছিল।

                                        দুই
বিকেলে সে যেই বাড়িটাতে এল সেটা ঠিক ফ্ল্যাট নয় সব বাড়িগুলো দোতালা কিম্বা তিনতালা, বোঝাই যাচ্ছে সবার নিজস্ব বাড়ি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। যেই বাড়িটাতে পিউ ঢুকল সেটাও অসাধারণ সুন্দরড্রাইভার কলিং বেল টিপতেই একজন বয়স্ক ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন যেন তিনি পিউএর জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। ড্রাইভার তাঁকে সেলাম করে চলে গেল। পিউ কিছু বলার আগেই উনি পিউকে বললেন “আমাকে তোমাদের এম ডি স্যার সব বলেগেছেন আমি তোমার সব ব্যবস্থা করে রেখেছি, দোতালার রুমগুলো পরিষ্কার করে রাখিয়েছি। তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর চা খেতে খেতে গল্প করা যাবে।” পিউএর কি মনে হল সে গিয়ে তাঁকে একটা টুক করে প্রণাম করে নীল, যদিও ওইসব এখন ব্যাকডেটেড। ভদ্রলোক হাঁ হয়ে তাকে দেখছিল, পিউই নিস্তব্ধতা ভঙ করে জিঙ্গাসা করল “ আমি কি আপনাকে আঙ্কল বলে ডাকতে পারি?” ভদ্রলোক তাকে সম্মতি দিতে সে উপরে চলে গেল। ফ্রেশ হয়ে ফিরে এসে সে আঙ্কলের সাথে গল্প করতে বসল। এই বাড়িতে উনি আর ওনার ছেলে থাকেন আর একটি কাজের লোক রাম। কিন্তু ছেলে কাজের জন্য বেশিরভাগ টাইম বাইরে কাটায় শুধু রাতে শুতে আসে বলা যায়। আন্টি মারা গেছেন সাত বছর আগে, আন্টি ছিলেন বাঙ্গালি। এটা শুনে পিউ মনে মনে বেশ সাহস পেল যে আঙ্কল বাঙ্গালি কালচার সম্বন্ধে কিছুটা হলেও জানবেন, তার অসুবিধে হবে না। পরের দিন অফিস আছে তাই তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল পিউ। অফিস যাওয়ার জন্য গাড়ি রেডি, রাম টিফিন দিয়ে দিয়েছিল আঙ্কল বললেন বাইরের খাওয়ার খেতে না। অফিসে এসে ল্যাবে গিয়ে কাজ শুরু করেছে এমন সময় এম ডি স্যার এসে তাকে বলে দিয়ে গেল যে কাল থেকে সবাই যেমন বাসে যাতায়াত করে সেরকম তাকেও বাসে আসতে হবে তার জন্য আলাদা করে গাড়ি দেওয়া যাবে নামনে মনে পিউ একটু রাগ করল,কি খড়ুস রে বাবা সে ত বলেনি তাকে গাড়ি দিতে আপনি নিজেই দিয়েছিলেন। পরেরদিন থেকে সে বাসে আসা যাওয়া শুরু হল। এটা শুনে আঙ্কল-ও একটু রেগে গিয়েছিলেন এম ডির ওপর। কিন্তু পিউ ই ওনাকে বুঝিয়ে বলতে উনি শান্ত হলেন।

                                        তিন
এইভাবে দুমাস কেটে গেল তারমধ্যে আঙ্কলের সাথে তার খুব ভাব হয়ে গেছেকোথাও গেলে সবসময় আঙ্কল সাথে থাকেন ঠিক তার বাবার মত। প্রথম মাসের স্যলারি পেয়ে মন্দির-এ পূজা দিয়েছে, মিষ্টি কিনে এনেছে, আঙ্কলের জন্য একটা শার্ট কিনেছে যদিও এগুলো তার মা তাকে ফোন করে বলে দিয়েছিল। নিজের জন্যও শপিং করেছে প্রচুর।  কিন্তু অফিসে ...
তার সেই টল ডার্ক হ্যান্ডসাম এম ডি সুযোগ পেলেই তাকে অপমান করছে, একটু কিছু তে গলদ দেখলেই বকাবকি করছে যেন সে বাচ্চা মেয়ে কিছুই জানে না। শুধু একটাই জিনিস অনার ভাল সবার সামনে বকাবকি দেন না ল্যাবে এসে বকা দেন। শুধু রেণুকা ম্যাডাম ছাড়া আর কারো সাথে তার তেমন একটা বন্ধুত্ব হয়নি। অফিসে মুড খারাপ থাকলেও বাড়ি গিয়ে আঙ্কলের সাথে তার বেশ মজা করেই কাটে। মাঝে মাঝেই দেখে তার খড়ুস এম ডি আঙ্কলের সাথে দেখা করতে আসে। সে তখন নিজের রুমে গিয়ে পড়াশুনা করে। একদিন আঙ্কলকে জিঞগাসা করেছিল উনি এখানে আসেন কেন? উত্তরে আঙ্কল বলেছিলেন “আমি ওর কনসাল্ট্যান্ট, ও ওর বিজনেসের ব্যাপারে কনসাল্ট করতে আসে আমার কাছে

                                                চার
হঠাৎ একদিন সে অফিস থেকে ফিরেছে আঙ্কল এসে পিউএর কাছ থেকে পিউএর বাবার ফোন নম্বর নিয়ে গেলতিনদিন পরে পিউএর মা তাকে ফোন করে বলল তারা গুরগাঁও আসবে এক সপ্তাহর মধ্যে। সে তো অবাক, সে কি না জেনে কিছু ভুল কাজ করল, সে তো কিছুই বুঝতে পারছে না। মাকে জিঙাসা করতে বলল তারা ঘুরতে আসছে কিন্তু সাথে ছোটো মামা আবার কেন? সে আঙ্কলকেও কিছু বলতে পারছেনা। পিউএর মা বাবা পৌঁছবে শনিবার সকালে, পিউ শুক্রবার সকাল থেকে ভাবছে এম ডি কে বলে ছুটি নেবে পরের দিনটা কিন্তু কিছুতেই সাহস কুলচ্ছে না। সে এম ডির কেবিনে যাবে যাবে ভাবছে এমন সময় এম ডি স্যার ল্যাবে আসল আর কাল তার ছুটি ঘোষণা করেই বেরিয়ে চলে যাচ্ছিল কিন্তু পিউ এমনভাবে তার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েছিল । সে তার দিকে তাকিয়ে বলল যে সে শুনেছে কাল তার মা-বাবা আসছেন। এম ডির এত সুন্দর গলার আওয়াজ সে আগে কখন শোনেনি যতবার শুনেছে বকাবকিই শুনেছে, ‘এটা করতে পারনা, এটা জান না, সেটা জান না, ওটা কি কলেজে শেখনি’ এইসব। এম ডি বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর তার হুঁশ হল। একবার মনে মনে এম ডিকে ভেংচিও কেটে দিল “জানেন তো সব কিছুই তাহলে বকাবকি করেন কেন সামান্য ব্যাপারে” আবার খুশিও হল,এম ডিকে ধরে নাচতেও ইচ্ছে হলশনিবার সকালে পিউ আর আঙ্কল মা-বাবাকে রিসিভ করতে যাচ্ছে। মা-বাবাকে দেখে তার আনন্দ তখন তুঙ্গে। আঙ্কলের সাথে পরিচয় করে মা-বাবা খুব খুশি। মা-বাবা হটেলে থাকবেন বলতে আঙ্কল বললেন তা কখন হতেই পারে না। আঙ্কলের দুটো বাড়ি এই শহরে একটাতে তিনি থাকেন আর অন্যটাতে তার ছেলে থাকে। মা-বাবা রাজি হয়ে গেলএতদিন হয়েগেল পিউ কিন্তু এই কথাটা জানত না যে আঙ্কলের দুটো বাড়ি। আরও কত অজানা তথ্য রয়েছে আঙ্কল সম্বন্ধে মা-বাবা বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর সে অবশ্যই প্রশ্ন করবে আঙ্কলকে আঙ্কল মা-বাবাকে ড্রপ করেদিলেন পিউও নামতে যাচ্ছিল কিন্তু আঙ্কল মানা করে বলল মা-বাবা তো বিকেলে আসছেন ওখানেই, তো রামের একটু তদারক করে দিতে উনি বুড় মানুষ। ইচ্ছে না করলেও মা-বাবা মামা সবাইওকে চলে যেতে বলতে একটু রাগই হয়েছিল কিন্তু যেতে হল।

                                        পাঁচ
দুপুরে ঘুমিয়ে পড়েছিল পিউ, উঠে দেখে পাঁচটা বাজে। হাত মুখ ধুয়ে নিচে এসে দেখে রামদা সব রেডি করে ফেলেছে। পিউ রামদাকে বলল কেন তাকে কেউ ডাকেনি। আঙ্কল কোথায় জিঙ্গাসা করতে বলল উনি মা-বাবাকে আনতে গেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে মা, বাবা, মামা আর আঙ্কল পৌঁছে গেলেন। পিউ ওনাদের নিয়ে গিয়ে ভেতরে বসালেন। পিউএর এ বাড়ির সব জানা শুধু আঙ্কলের বেডরুম ছেড়ে দিয়ে। পিউ সবাইকে চা জলখাবার সার্ভ করছে যেন আ বাড়ির কর্তী সে। পিউ তার বাবা আর আঙ্কলের মাঝে বসে আছে দরজার দিকে মুখ করে। সে দেখল গাড়ি থেকে নেমে তাদের এম ডি আসছে পিউএর মুখতা ফ্যাকাসে হয়ে গেল। উফ! এই লোকটা কি কাজ ছাড়া কিছু জানেনা। জানে এখানে মা বাবা আসবে তবুও... ভাল লাগল না পিউর। পিউ চুপিচুপি আঙ্কলের কাছে গিয়ে বলল “আঙ্কল আপনার কাস্টমার এসেগেছে, উফ এই লোকটা আর এই লোকটার কাজ”। সামনে এসেই পিউর এম ডি কোন দিকে না তাকিয়ে ছোট মামার দিকে হাত তুলে নমস্কার করে তার বাবা মাকে নমস্কার করল, আবার শুদ্ধ বাংলায় জিঙাসা করল তারা কেমন আছে। পিউর কানটা নিজেই বিশ্বাস করতে চাইছিল না তো পিউ কি করে বিশ্বাস করবে। এতো ভাল বাংলা জানেন উনি  অথচ পিউএর সাথে হিন্দি কিম্বা ইংরাজিতেই কথা বলে এসেছে। এবার আর বড় বোমা বিস্ফোরণ হল যখন তার এম ডি মিস্টার শুভাদীপ শর্মা পিউর আঙ্কলকে বলল “পাপা আমি ভেতর থেকে হাত মুখধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আসছি” আর সবাইএর থেকে অনুমতি নিয়ে ভেতরে চলে গেল। পিউর পা কাঁপছে, মাথা ঘোরাচ্ছে, গলায় কথা আঁটকে গেছে। সে দৌড়ে ওপরে নিজের ঘরে এল। কিছুক্ষণের জন্য পুর ব্ল্যাংক তারপর সে অঙ্ক মেলাতে বসল বুঝল ছোট মামা ওনাকে আগে থেকেই চিনত কারণ ছোট মামাই তার জবের ইন্টারভিউটা করিয়ে দিয়েছিল, আর মা বাবা এতদূরে আসব শুনেও কোনও তর্ক করেননি এইজন্যই। সে সব বুঝতে পেরে রাগে কান্নায় তার গলা ধরে আসছিল। এমন সময় দরজা থেকে আওয়াজ এল “আসতে পারি?” ভারি হয়ে যাওয়া চোখের পাতা তুলে দেখল মিস্টার শুভদীপ। হ্যাঁ বা না কিছুই বলল না শুধু চোখের পাতা নামিয়ে নীলমিস্টার শুভদীপ একটা চেয়ার টেনে একেবারে তার মুখের সামনে এসে বসল, পিউকে বলল “তোমাকে একটা পুরাণ গল্প শোনাই যদিও তোমার জানা তবুও... ছয় বছর আগে তোমরা যখন ফার্স্ট ইয়ার, তখন আমি ফোর্থ ইয়ার পাস করে বেরিয়েগেছি শুধু একমাসের জন্য কলেজে ছিলাম ক্যাম্পাসিংএর জন্য, তখন আমি তোমায় দেখি আর ভাল লেগে যায়। রেণুকার হাত দিয়ে বলেও পাঠিয়েছিলাম। রেণুকা আমার জুনিয়র আর আমার বেস্টফ্রেন্ডের গার্লফ্রেন্ড যদিও এখন সে তার বিবাহিতা স্ত্রী। রেণুকাকে তুমি না বলে দিতে আমিও ভাবলাম তুমি আমার ইনফ্যাচুএশনও হতে পার তাই ভাবলাম তোমাকে ভুলে যাব কিন্তু পারিনি। পাপা রিটায়ার করে আই বিজনেসটা শুরু করেছিলেন যখন দেখলাম ক্যাম্পাসিং এ কিছু হল না তখন পাপার বিজনেস জয়েন করলাম, মালিক উনিই আমি একজন কর্মচারী মাত্র। এখানে এসেও তোমাকে আমি ভুলতে পারিনি। হঠাৎ একদিন তোমার মামার সাথে পরিচয় বিজনেস সূত্রেতিনি বললেন তার ভাগ্নি মানে তুমিও ওই একই কলেজে পড়েছ। তখন বাড়িতে এসে পাপাকে বললাম, পাপাই তোমার মামার সাথে প্ল্যান করে ইন্টারভিউএর ব্যবস্থা করেছিলেন। পাপারও ইচ্ছে ছিল তোমাকে কাছ থেকে দেখা। যাইহোক আমরা যদি কন ভুল করে থাকি আমাদের ক্ষমা করে দিওআমি তোমাকে খুব ভালবাসি তাই এইসব করেছি, খুব খুব ভালবাসি।”
এইবার পিউ তার ragrupi  কান্নাটা আর চেপে রাখতে পারল না ঝর্নার মত বইতে লাগল শুভ তার মাথায় হাত বুলিয়ে কান্না মুছে দিতে লাগল। শুভর মা বাঙ্গালি তাই হয়ত সে পিউ কে চুজ করেছিল পিউ অন্তত তাই ভাবল। তারপর একে একে মা বাবা আঙ্কল সবাই তার ঘরে আসল। শুভ তখন সরে গিয়ে ঘরের এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে। মা বলল কিরে রাগ হচ্ছে আমাদের ওপর কারণ মা-বাবা জানে পিউ রাগ করলেই কেঁদে ফেলে। পেছন থেকে আঙ্কল বললেন “ পিউ তুমি কি তোমার খড়ুস এম ডি কে বিয়ে করতে চাও?” পিউ হেসে ফেলল কিন্তু লজ্জায় মুখ তুলতে পারল না।
পিউ অজানা অনেক কিছু জানল। তার উইশ পূর্ণ হল দিল্লিতে থাকার। এখন তার বেস্টফ্রেন্ড তার আঙ্কল ওহ না না তার পাপা। পিউ এখন রেগুলার অফিস যায় তার ডিপার্টমেন্ট ল্যাব, ল্যাবের সব কাজকর্ম সেই দেখে। তবে এখন এম ডির কাছে বকা খায় সাথে আদরও খায়।


1 comment:

  1. খুব ভাল লাগল । মনে হয় লেখিকার নিজের কথা কিন্তু আমি জানি অনেকটাই বা সবটাই জল ( কল্পনা ) মেশান । দেখ যারা কাছের লোক তারা আবার ভুল না বোঝে । :D
    কিছু বানান ভুল আছে , ঠিক করে নিও ।

    ReplyDelete